তিতাস নিউজ ডেস্কঃ
পরনে সাদা ধুতি ও কুর্তা। পিঠ পর্যন্ত লম্বা তেল জবজবে চুল। পায়ে জুতো নেই। এমন চেহারার ঘুগনি বিক্রেতা স্বাভাবিক ভাবেই কারোর নজরে আসে না। কিন্তু অনেকেই জানেন না অত্যন্ত অনাড়ম্বর জীবন কাটানো এই মানুষটি একজন অত্যন্ত জনপ্রিয় কবি।িি
ক্লাস থ্রি পর্যন্ত পড়া এই ঘুগনি বিক্রেতা কবি কে নিয়ে ৫ জন পি এইচ ডি করেছেন এবং ১৪ জন স্কলার গবেষণা করছেন। তাঁর ঝুলিতে রাষ্ট্রপতি পদক ‘পদ্মশ্রী’, সম্বলপুর বিশ্ববিদ্যালয় থেকে প্রাপ্ত ‘সাম্মানিক ডক্টরেট’, ওড়িশার ‘সাহিত্য একাডেমী’ এর মতো পুরস্কার। এমন কি তাঁর গ্রন্থগুলি সম্বলপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের মাস্টার্স এর সিলেবাসে স্থান পেয়েছে।
ওড়িশার বড়গড় জেলার ঘেনসে গ্রামে ১৯৫০ সালের ৩১ মার্চ এক অত্যন্ত গরিব পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন এই কবি। মাত্র ১০ বছর বয়সেই পিতা-মাতা কে হারান। দারিদ্রতার জন্য মাত্র তৃতীয় ক্লাস পর্যন্ত পড়ার পরই পড়াশোনায় তাঁর ছেদ পড়ে। তারপর কখনও হোটেলে কাপ ধোয়ার কাজ, কখনও হোস্টেলে রাধুনির কাজ, কখনও বা ঘুগনি বিক্রির মতো কাজ করতে বাধ্য হন। তবুও কখনও জীবন যুদ্ধে তিনি হার মানেন না। তবুও তাঁর রক্ত থেকে কখনও কবি প্রতিভা হারিয়ে যায় নি। তিনি লিখতে থাকেন। সেইসঙ্গে কবিতা আবৃত্তি ও গানও গাইতেন।
কোশলি ভাষার এই কবির প্ৰথম কবিতা ‘ধোদো বড়গাছ’ (বুড়ো বটগাছ)। তাঁর রচনাগুলির মধ্যে অন্যতম হল ‘ভাব’ ‘সুরত’ সহ বহু জনপ্রিয় কবিতা। ‘আচিয়া’ ‘বাছার’ ‘মহাসতী উর্মিলা’ ‘তারা মন্দোদরী’ ‘শিরি সামালাই’ ‘প্রেম পইচান’ ‘বীর সুরেন্দ্রসাই’ ‘শান্ত কবি ভিমাভাই’ ‘প্রেম কবি গঙ্গাধর’ ইত্যাদি মোট ২০ টি মহাকাব্যের রচয়িতা এই কবি। তাঁর কাব্যগুলি সংকলিত করে প্রকাশিত হয়েছে হলধর গ্রন্থাবলী, হলধর গ্রন্থাবলী-২ এবং তাঁর তৈরি নতুন কাব্যধারা ‘হলধর ধারা’ নামে বিশ্বে সমাদৃত।
মা সরস্বতীর বরপুত্র মহাকবি অথচ অতি সাধারণ মানুষটি হলেন ‘লোক কবিরত্ন’ ‘পদ্মশ্রী’ কবি হলধর নাগ।
অনেক অনেক শ্রদ্ধা ও প্রণাম জানাই তাঁর চরণে….
পাশে থাকুন । যদি আমাদের কাজ আপনাদের ভাল লাগে তাহলে অবশ্যই লাইক;শেয়ার করুন।