শিরোনাম :
নবীনগরে পানিতে গোসল করতে নেমে এক গৃহবধূর মৃত্যু  পবিত্র ঈদকে সামনে রেখে কোরবানির গরুর পরিচর্যায় ব্যস্ত নবীনগর নাটঘরের খামারি জহির মিয়া আশুগঞ্জে বজ্রপাতের আঘাতে যুবকের মৃত্যু, আহত আরো একজন নবীনগরে নেশাগ্রস্তের ছুরিকাঘাতে ছাত্রলীগের আহবায়ক আহত নবীনগরে দোকানগুলোতে পশু জবাই ও মাংসের মান নিয়ন্ত্রণে মোবাইল কোর্ট অভিযান  সরাইলে প্রয়াত দেওয়ান মাহবুব আলী কুতুব মিয়ার ৫২তম স্মরণ সভা অনুষ্ঠিত আশুগঞ্জ থানায় নতুন ওসি  হিসেবে যোগদান করেছেন নাহিদ আহাম্মেদ রানীশংকৈলে মাঠ পর্যায়ে কার্যক্রম পরিদর্শন করলো ইউরোপীয় ইউনিয়নের প্রতিনিধি নবীনগর উপজেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি’র বিরুদ্ধে মামলা আইডিয়ালের ছাত্রীকে ‘যৌন নির্যাতনকারী’ অধ্যক্ষের ‘বন্ধু’নরসিংদীর বিএনপি নেতা মুস্তাক আহমেদ
শুক্রবার, ০৯ জুন ২০২৩, ০৯:৪৫ পূর্বাহ্ন

বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়ের জীবনের শেষ সময়ের আখ্যান

প্রতিনিধির নাম / ৯০ বার
আপডেট : শনিবার, ১৭ ডিসেম্বর, ২০২২

তিতাস নিউজ ডেস্কঃ 

১৯৫০ সাল, ১৫ই কার্ত্তিক

কথাসাহিত্যিক বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়ের পরিবারে নেমে এল ঘন অন্ধকার। তিনদিন আগে ধলভূমগড় রাজবাড়ির আমন্ত্রণে এক সাহিত্যসভায় যোগ দিতে গিয়েছিলেন বিভূতিভূষণ। সে দিন সকালেও প্রতিদিনের মতো হাঁটতে বেরুবেন তিনি। তাঁর প্রিয় খাবার শুকনো চিঁড়ে আর নারকোল কোরা খেতে দিয়েছিলেন। কল্যানীদেবী। খাওয়ার পরেই উনি বললেন — বুকে বোধহয় চিঁড়েটা আটকে গেছে, বুকটা কেমন ব্যথা লাগছে। কল্যানী বুকে পিঠে মাসাজ করে দিয়ে বললেন, আজকে আর হাঁটতে যেয়ো না। বিভূতিভূষণ চিরপথিক, কথা না শুনে যথারীতি হাঁটতে বেরিয়ে গেলেন।

সন্ধ্যাবেলায় রাজবাড়ি থেকে এলো তাঁকে নিয়ে যেতে। অনেক প্রখ্যাত সাহিত্যিকেরা এসেছিলেন এই সভায় সে দিন। হঠাৎ তাঁর শরীর খারাপ হল। কয়েক বার বমি করলেন। অসুস্থ হয়ে পড়াতে তাঁকে সকলে ধরাধরি করে গাড়িতে তুলে বাড়িতে পৌঁছে দিলেন।
বেশ ঠান্ডা পড়েছে তখন ঘাটশিলায়। খোলার ছাদের বাড়িতেও খুব ঠান্ডা, তা সত্ত্বেও ওঁকে ভেতরের ঘরে নিয়েই যাওয়া গেল না। চারদিকে কাপড় টাঙিয়ে একটা খাটিয়ায় তাঁকে শোওয়ানো হল। ডাক্তার ভাই নুটবিহারী কোরামিন দেওয়া থেকে শুরু করে গরমজলে সেঁক দেওয়া এবং আনুঙ্গিক যা যা করার করলেন। সকলের আপ্রাণ দৌড়াদৌড়ি সত্ত্বেও আরোও অসুস্থ হতে থাকলেন তিনি। ইতিমধ্যে রামকৃষ্ণ আশ্রম থেকে স্বামী প্রজ্ঞানন্দ এসে পড়েছেন।
তাঁকে দেখে বিভূতিভূষণ বললেন — ‘ আমাকে নাম শোনান..। ’

এর মধ্যে তাঁর স্ত্রী কল্যানীদেবী, ভ্রাতৃবধূ যমুনারা বুঝতে পেরেছেন বিভূতিভূষণের মৃত্যু আসন্ন। কল্যানী স্বামীকে কাঁদতে কাঁদতে বলছেন — ‘ তুমি আর দেশের বাড়ি যাবে না?’ কষ্ট হচ্ছে, তাও উনি বলছেন, ‘তোমরা যাবে, আমি সঙ্গে থাকবো।’

এমন সময় পাশের ঘরে পুত্র বাবলু, তখন মাত্র তিন বছর বয়স, কেঁদে উঠেছে। উনি কল্যানীর আঁচল ধরে বাবলুকে নিয়ে আসার জন্য ডাকলেন। কল্যানী বললেন, ‘ আমি কিছুতেই যাবো না। ওকে তো এরপর সারাজীবনই কাঁদতে হবে।’ কিন্তু, বিভূতিভূষণ শুনছেন না। বারবার আঁচল ধরে টানছেন কল্যানীর। অবশেষে কল্যানী তাড়াতাড়ি উঠে গেলেন তাকে আনতে।

স্বামী প্রজ্ঞানন্দ সকলের নাম পাঠ করছেন.. উনার কষ্ট সত্তেও বললেন, ‘ রামপ্রসাদের নাম বললেন না তো?’
এদিকে কল্যানী বাবলুকে নিয়ে এসে দাঁড়িয়েছেন। তার দিকে হাসিমুখে তাকালেন বিভূতিভূষণ। এবং তাঁর চোখ ধীরে ধীরে বন্ধ হয়ে এলো। তখন রাত আটটা বেজে পনেরো মিনিট..

মিত্রা বন্দ্যোপাধ্যায়,বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়ের পুত্রবধু 


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ জাতীয় আরো সংবাদ