যাকাত নিজ ইচ্ছেমত যাকে-তাকে দিলে আদায় হবে না। আল্লাহ তায়ালা যাকাতের আটটি খাত উল্লেখ করেছেন।
১. ফকিরঃ ফকির এমন মজুর ও শ্রমজীবীকে বলা হয়, যে শারীরিক ও মানসিকভাবে কর্মক্ষকম হওয়া সত্ত্বেও প্রতিকুল অবস্থার কারণে বেকার ও উপার্জনহীন হয়ে পড়েছে। ছিন্নমূল মানুষ এবং শরণার্থীদেরও ফকির বলা যেতে পারে।
২. মিসকিনঃ বার্ধক্য, রোগ, অক্ষমতা, পঙ্গুত্ব যাকে উপার্জনের সুযোগ হতে বঞ্চিত করেছে অথবা যে ব্যক্তি উপার্জন দ্বারা তার প্রকৃত প্রয়োজন পূরণ করতে অক্ষম এবং আশ্রয়হীন শিশু-এদের সকলকেই মিসকিন বলা হয়।
৩. যাকাত বিভাগের কর্মচারীদের বেতন-ভাতাঃ যাকাত আদায় এবং বন্টন করার কাজে যারা সার্বক্ষণিক নিযুক্ত থাকবে তাদের বেতন-ভাতা আদায়কৃত যাকাত থেকে দেয়া হবে।
৪. নও মুসলিম স্বনির্ভর করাঃ সংগতিহীন নও মুসলিমকেও স্বনির্ভর করার কাজে যাকাতের অর্থ ব্যয়ে হতে পারে।
৫.দাসমুক্তিঃ দাসমুক্তি বা বন্দিদের মুক্ত করতে যাকাতের সম্পদ ব্যয় করা যাবে। এখানে দাস বা বন্দি বলতে বিখ্যাত তাফসীরকারক আল্লামা আসাদের তাফসীরে যারা পরিস্থিতি বা পরিবেশের বন্দি বা শিকার তাদের কথাও বলা হয়েছে। অর্থাৎ ভূ-লন্ঠিত, অপরিচিত, দুর্গম-দূরবর্তী অভাবগ্রস্ত এলাকার দুস্থ-অসহায়দের যাকাত দেয়া যাবে।
৬.ঋণমুক্তিঃ যারা নিজেদের দৈনন্দিন প্রয়োজন পূরণ করতে গিয়ে ঋণ করে সে ঋণ পরিশোধে অক্ষম হয়ে পড়েছে, তাদেরকে যাকাতের সম্পদ হতে সাহায্য করা যাবে। যাদের বাড়ি-ঘর আগুনে পুড়ে গেছে, বন্যা-প্লাবনে মাল-আসবাব ভেসে গেছে,তাদের পরিবার-পরিজনের ভরণপোষণে যাকাতের সম্পদ দেয়া যাবে।
৭. ইসলাম প্রচার ও প্রতিষ্ঠার ব্যবস্থাঃ যাকাতের সপ্তম খাত হলো “ফি সাবী লিল্লাহ” (আল্লাহর পথে)। ইসলামী চিন্তাবিদগণের সম্মিলিত মত হলোঃ ‘আল্লাহ নির্দেশিত পথে প্রতিটি জনকল্যাণকর কাজে,দ্বীন ইসলামের প্রচার ও প্রতিষ্ঠার উদ্দেশ্যে যত কাজ করা সম্ভব সেসব ক্ষেত্রেই এ অর্থ ব্যয় করা যাবে’। (ইসলামের অর্থনীতি-আল্লামা মুহাম্মদ আব্দূর রহীম,পৃষ্ঠা-২৭৭)
৮. মুসাফিরঃ যাকাতের অষ্টম খাত হলো ‘ইবনুস সাবীল’ (নিঃস্ব পথিকদের জন্যে)। যেসব পথিক বা মুসাফির যাত্রাপথে নিঃসম্বল হয়ে পড়েছে তাদেরকে যাকাতের অর্থ দেয়া যাবে।
তথ্যসূত্রঃ কোয়ান্টাম ফাউন্ডেশন থেকে প্রকাশিত ‘দারিদ্র বিমোচনে সঙঘবদ্ধভাবে যাকাত আদায় করুন” পুস্তিকা ।