শিরোনাম :
সানরাইজ স্কুলে মা সমাবেশ অনুষ্ঠিত কোরবানীর ঈদকে সামনে রেখে মহিয লালন পালন করে বিক্রির জন্য প্রস্তুত শিবপুরের এক খামারি  আশুগঞ্জে ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ারিং ছাত্র-শিক্ষক-পেশাজীবি সংগ্রাম পরিষদের মানববন্ধন ও স্মারকলিপি প্রদান নবীনগরে বিশ্ব তামাকমুক্ত দিবস পালিত নবীনগর পৌর এলাকার আলমনগর দক্ষিণ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে বার্ষিক পুরস্কার বিতরনী নবীনগরে বঙ্গবন্ধু ও বঙ্গমাতা প্রাথমিক বিদ্যালয় গোল্ডকাপ ফুটবল টুর্নামেন্ট অনুষ্ঠিত। নবীনগরে সংঘাত রুখতে দেশীয় অস্ত্র টেটা-বল্লম উদ্ধার ব্রাক্ষণবাড়িয়ার বিজয়নগরে যুবকের লাশ উদ্ধার আটোয়ারীতে এক ইউনিয়ন পরিষদের উন্মুক্ত বাজেট ঘোষণা কর্মবীর’ খ্যাত প্রকৌশলী বিপুল বণিকের বিরুদ্ধে দুদকে একটি অভিযোগ দাখিল ও প্রাসঙ্গিক দুটি কথা—–!!!
বৃহস্পতিবার, ০১ জুন ২০২৩, ১১:০৭ পূর্বাহ্ন

ঘরপালানো বালকের বিশ্বজয়ের কাহিনীঃ সুরসম্রাট ওস্তাদ আলাউদ্দিন খাঁ

প্রতিনিধির নাম / ১০১ বার
আপডেট : রবিবার, ৪ সেপ্টেম্বর, ২০২২


সংগীত সাধনার জন্য নিজের পড়াশোনা শিকেয় উঠেছিল। তাই পিতা সাধু খাঁ তৃতীয়
সন্তাান আলাউদ্দিনকে পড়াতে চেয়েছিলেন ভালোভাবে। ভর্তি করিয়ে দিয়েছিলেন জমিদার বাড়ীর
পাঠশালায়। কিন্তু সংগীতের প্রতি ছোট্ট আলাউদ্দিনের ভালোবাসা ছিল আরও গভীর।

দুরন্ত ওই বালক স্কুল ফাঁকি দিয়ে চলে যেতেন পাশের শিব মন্দিরে। তন্ময় হয়ে সারাদিন শুনতেন সেতারের সুর। একদিন ধরা পড়লে পুরোদিন দড়ি দিয়ে বেঁধে রাখা হলো তাকে। সেদিনই প্রতিজ্ঞা করেন সুরের
সাধনায় কাটাবেন বাকি জীবন। একদিন সুযোগও এসে গেল হাতের কাছে। তখন তার বয়স আট কি নয়। অসুস্থ মা ঘুমাতে যাওয়ার সময় চাবির গোছা খুলে পড়ল আঁচল থেকে। গভীর রাতে মায়ের বক্স থেকে ১২ টাকা চুরি করে বেরিয়ে পড়েন অজানার উদ্দেশ্যে।
নবীনগর যেতে পাড়ি দেন ছোট্ট বসখালী, কনিকাডা, বরই নদী এবং বিভীষিকাময় কাহিনী ছড়ানো হালিখার বিল। নবীনগরের মনতলা জাহাজঘাট থেকে নারায়ণগঞ্জ হয়ে চলে যান গোয়ালন্দ ঘাটে। সেখান থেকে ট্রেনে চড়ে কলকাতায়। প্রথমবারের মতো জাহাজ এবং ট্রেন দেখেন তিনি। কলকাতায় গিয়ে পড়েন মহাবিপদে। শানবাঁধানো ঘাটে ঘুমিয়ে পড়লে চুরি হয়ে যায় পুঁটলিটি। অতঃপর পাশের একটি শ্মশানে কাঙালীদের সঙ্গেই আশ্রয় খুঁজে নেন তিনি। কাঙালী ভেবে স্থানীয় ছেলেরা একদিন কুকুর লেলিয়ে দিয়েছিল তার পেছনে।

অবশেষে বিশেম্বর বাবু নামে এক সংগীতজ্ঞ সংগীতচর্চার ব্যবস্থা করে দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েও পড়েন বিপাকে। কারণ বিশেম্বর বাবুর সংগীতগুরু মহারাজ যতীন্দ্রনাথ ঠাকুর গোঁড়া হিন্দু। মুসলমানের ছায়াও মাড়ান না তিনি। কিন্তু স্ত্রীর অনুরোধে আলাউদ্দিনের নাম পাল্টে মনোমোহন দেব উত্তরার নামে পাঠান গুরুর কাছে। সেখানে এক যুগ সুর সাধনার পর তিনি হয়ে উঠেন বিশ্বনন্দিত সুরসম্রাট ওস্তাদ আলাউদ্দিন খাঁ। বাংলাকে পরিচয় করে দেন বিশ্বদরবারে।

বিভিন্ন গ্রন্থ থেকে এসব তথ্য জানা গেছে। নবীনগরের শিবপুরে ঢুকলেই যে কেউই দেখিয়ে দেবে সুরসম্রাট আলাউদ্দিনের বসতভিটা। যা সুরের সাধকদের কাছে আজ তীর্থস্থান। কিন্তু বর্তমানে তার বসতভিটায় নেই কোনো ঘর। তার আত্মীয় মো. ইদ্রিস খাঁ জানান, নতুন ঘর নির্মাণের জন্যই পুরানোটি ভাঙা হয়েছে।

বসতভিটার পাশেই রয়েছে তার নামে একটি কলেজ।
মাত্র নয় বছর জন্মভূমিতে কাটালেও কলেজের পাশেই রয়েছে তার নিজ হাতে গড়া সুদৃশ্য মসজিদ। আত্মীয় খুরশীদ খাঁ জানান, অনেক স্মৃতি জড়িয়ে আছে এ মসজিদকে ঘিরে। বহন করে ঐতিহ্যের স্মারকও।

তাছাড়া ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় তিনি প্রতিষ্ঠা করেছিলেন একটি সংগীত বিদ্যালয় এবং আলম ব্রাদার্স নামে একটি বাদ্যযন্ত্র তৈরীর কারখানা। যেখানে তিনি চালাতেন সংগীত গবেষণার কাজ। ১৯৩৫ সালে বিশ্বখ্যাত নৃত্যশিল্পী উদয়শঙ্করের সঙ্গে বিশ্ব ভ্রমণে বের হন তিনি। এ সময় তিনি ইংল্যান্ডের রানী কর্তৃক সুরসম্র্রাট খেতাবপ্রাপ্ত হন। ভারতের সর্বোচ্চ রাষ্ট্রীয় খেতাব পদ্মভূষণ ছাড়াও পদ্মবিভূষণ, বিশ্ব ভারতীয় দেশীকোত্তমসহ দিলি ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে লাভ
করেন সম্মানসূচক ডক্টরেট ডিগ্রি।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ জাতীয় আরো সংবাদ